আপনি যদি রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
আজকের আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়লে আপনারা কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায় বা রোজা ভঙ্গের কারণ কি কি তা জানতে পারবেন।
পবিত্র রমজানের ফরজ একটি বিধান হচ্ছে রোজা। যা আমাদের সকলকে পালন করতে হবে।রোজা রেখে রোজা ভঙ্গের শাস্তি অনেক ভয়াবহ।তাই,রোজা রাখার পর অনেক সতর্ক থাকতে হবে যেন সেই রোজাটি ভঙ্গ হয়ে না যায়। এ কারণেই রোজা ভঙ্গের কারণগুলো আমাদের জানতে হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক রোজা ভঙ্গের কারণগুলো।
রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি?
সাধারণত তিনটি কারণে রোজা ভেঙে যায়। সেগুলো হলো- খাওয়া, পান করা ও স্ত্রী-সম্পর্ক। এছাড়াও আরো কিছু কারণ আছে যেগুলোর কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়। তো চলুন সংক্ষিপ্তভাবে জেনে নেওয়া যাক সেই কারণগুলো।
১.ভুলে খাওয়া বা পান করার পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৫)
২.বিড়ি-সিগারেট বা হুঁকা সেবন করা। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
৩.কাঁচা চাল, আটার খামির বা একত্রে অনেক লবণ খাওয়া। (ফাতওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ১৯৯)
৪.এমন কোনো বস্তু খাওয়া, যা সাধরণত খাওয়া হয় না। যেমন- কাঠ, লোহা, কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা ইত্যাদি। (ফাতওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২; জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
৫.পাথর, কাদামাটি, কঙ্কর, তুলা-সুতা, তৃণলতা, খড়কুটো ও কাগজ গিলে ফেলা। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০৩)
৬.নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেললে। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২)
৭.ভুলে স্ত্রী সম্ভোগের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে— আবার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস সম্পর্ক করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৫)
৮.কানে বা নাকের ছিদ্র দিয়ে তরল ওষুধ দেওয়া। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ১২৭)
৯.দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি তা থুতুর চেয়ে পরিমাণে বেশি হয় এবং কণ্ঠনালিতে চলে যায়। (ফাতাওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৬৭)
১০.মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক করা। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ১৭২)
১১.হস্তমৈথুন করা। (ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ, খণ্ড : ০৬, পৃষ্ঠা : ৪১৭)
১২.রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি কিংবা নাকে পানি দেওয়ার সময় কণ্ঠনালিতে পানি চলে যাওয়া। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা : ৪২৯)
১৩.কাউকে জোর-জবদস্তি করে পানাহার করানো। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২)
১৪.রাত মনে করে সুবহে সাদিকের পর সাহরি খাওয়া। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
১৫.ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতহুল কাদির, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৩৩৭)
১৬.সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ভুলে দিনে ইফতার করা। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৯)
১৭.যদি কেউ রাত ধারণা করে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়ে যায়, অতঃপর সুবহে সাদিকের কথা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ সহবাস থেকে বিরত হয়ে যায়। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৪)
১৮.বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যানালির ভেতরে চলে গেলে রোজা ভেঙে যায়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০৩)
আরও পড়ুন: দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ
রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি? শেষ কথা
সামনে আসতেছে রমজান মাস। আর রমজান মাসে প্রতিটি রোজা প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ। তাই আপনারা যে করেই হোক না কেন সম্পূর্ণ রোজা করবেন। এই রমজান মাসে রোজা রাখার ফজিলত অনেক। আর একটি রোজা না করার শাস্তিও অনেক ভয়াবহ। আল্লাহ পাক আমাদের সবার কে রোজা রাখার তৌফিক দান করুন আমীন।